ঢাকা , শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ২৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের উদ্যোগে-

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন’ এর উদ্বোধন ও সেমিনার অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের উদ্যোগে ‘ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিক উইক’-এর অংশ হিসেবে আজ শনিবার (০২ আগস্ট ২০২৫) অনুষ্ঠিত হলো “ফিউচার অব সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন” শীর্ষক এক সেমিনার। একই সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন’-বাংলাদেশে এই ধরণের উদ্যোগ এটিই প্রথম।

পরিবেশবান্ধব, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনকে একত্রে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এই কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা বাংলাদেশের টেকসই ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশের সবচেয়ে তরুণ পরিবেশ বিষয়ক লেখক এবং গবেষক ফারাজ ইসলাম।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, আইএফসি'র (ওঋঈ) দক্ষিণ এশিয়ার ইএসজি প্রজেক্ট লিড লোপা রহমান এবং উর্মি গ্রুপের পরিচালক শামরুখ ফখরুদ্দিন।

মূল বক্তব্যে জাভেদ আখতার বলেন, সাসটেইনেবিলিটি এখন আর শুধু একটি বিভাগ বা প্রকল্পের বিষয় নয়- এটি প্রতিটি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হলে সাহসিকতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নিজের জীবন ও কর্মের দায় নিতে হবে। তিনি ভবিষ্যতের ব্যবস্থাপকদের জন্য ব্যক্তিগত স্থিতিশীলতা ও আজীবন শেখার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

লোপা রহমান বলেন, টেকসই উন্নয়ন মানেই শুধু মুনাফা নয়। সামাজিক দায়িত্ব, পরিবেশের প্রতি সম্মান এবং কর্মীদের নিরাপত্তা- এই বিষয়গুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের তরুণরা প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে দুর্দান্ত। তাই সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।

শামরুখ ফখরুদ্দিন বলেন, স্বাচ্ছন্দ্যের গন্ডি থেকে বের হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস থাকতে হবে। আমি যখন ইউনিলিভার ছেড়েছিলাম, অনেকে ভুল বলেছিল। কিন্তু আজ মনে করি, সেটাই আমাকে নতুন অভিজ্ঞতা ও দক্ষতায় সমৃদ্ধ করেছে। তিনি দলগত কাজ ও সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

ফারাজ ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী সাসটেইনেবিলিটির জন্য প্রতিবছর ৪ ট্রিলিয়নেরও বেশি ডলার প্রয়োজন, অথচ আমরা তার এক-চতুর্থাংশেরও প্রতিশ্রুতি দিতে পারিনি। কিন্তু আমরা এই সংকটকে অর্থ দিয়ে নয়, উদ্ভাবনের মাধ্যমে জয় করতে পারি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের উপদেষ্টা শাহনীলা আজহার বলেন, সাসটেইনেবিলিটি ও ইনোভেশন আজকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর একটি। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের শুধু কর্মজীবনের জন্য নয়, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার সক্ষমতা অর্জনের জন্য প্রস্তুত করতে চায়।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ মুজাক্কীরুল হুদা তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে এমন একটি ভারসাম্যপূর্ণ পথ যেখানে অর্থনীতি, পরিবেশ ও সমাজ একে অপরের পরিপূরক।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ফারাজ ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই কেন্দ্রটি কৃষি, অবকাঠামো ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সেমিনারের সমাপ্তি ঘটে অংশগ্রহনকারীদের সঙ্গে আলোচকদের এক প্রানবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লেবার পার্টির দলীয় মনোনয়ন পেলেন শাহ মাছুম ফারুকী

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের উদ্যোগে-

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন’ এর উদ্বোধন ও সেমিনার অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের উদ্যোগে ‘ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিক উইক’-এর অংশ হিসেবে আজ শনিবার (০২ আগস্ট ২০২৫) অনুষ্ঠিত হলো “ফিউচার অব সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন” শীর্ষক এক সেমিনার। একই সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন’-বাংলাদেশে এই ধরণের উদ্যোগ এটিই প্রথম।

পরিবেশবান্ধব, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনকে একত্রে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এই কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা বাংলাদেশের টেকসই ও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশের সবচেয়ে তরুণ পরিবেশ বিষয়ক লেখক এবং গবেষক ফারাজ ইসলাম।

আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, আইএফসি'র (ওঋঈ) দক্ষিণ এশিয়ার ইএসজি প্রজেক্ট লিড লোপা রহমান এবং উর্মি গ্রুপের পরিচালক শামরুখ ফখরুদ্দিন।

মূল বক্তব্যে জাভেদ আখতার বলেন, সাসটেইনেবিলিটি এখন আর শুধু একটি বিভাগ বা প্রকল্পের বিষয় নয়- এটি প্রতিটি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হলে সাহসিকতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নিজের জীবন ও কর্মের দায় নিতে হবে। তিনি ভবিষ্যতের ব্যবস্থাপকদের জন্য ব্যক্তিগত স্থিতিশীলতা ও আজীবন শেখার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

লোপা রহমান বলেন, টেকসই উন্নয়ন মানেই শুধু মুনাফা নয়। সামাজিক দায়িত্ব, পরিবেশের প্রতি সম্মান এবং কর্মীদের নিরাপত্তা- এই বিষয়গুলোও সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের তরুণরা প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে দুর্দান্ত। তাই সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও স্বচ্ছতা বজায় রেখে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।

শামরুখ ফখরুদ্দিন বলেন, স্বাচ্ছন্দ্যের গন্ডি থেকে বের হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস থাকতে হবে। আমি যখন ইউনিলিভার ছেড়েছিলাম, অনেকে ভুল বলেছিল। কিন্তু আজ মনে করি, সেটাই আমাকে নতুন অভিজ্ঞতা ও দক্ষতায় সমৃদ্ধ করেছে। তিনি দলগত কাজ ও সম্মিলিত লক্ষ্য অর্জনের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

ফারাজ ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী সাসটেইনেবিলিটির জন্য প্রতিবছর ৪ ট্রিলিয়নেরও বেশি ডলার প্রয়োজন, অথচ আমরা তার এক-চতুর্থাংশেরও প্রতিশ্রুতি দিতে পারিনি। কিন্তু আমরা এই সংকটকে অর্থ দিয়ে নয়, উদ্ভাবনের মাধ্যমে জয় করতে পারি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের উপদেষ্টা শাহনীলা আজহার বলেন, সাসটেইনেবিলিটি ও ইনোভেশন আজকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোর একটি। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের শুধু কর্মজীবনের জন্য নয়, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার সক্ষমতা অর্জনের জন্য প্রস্তুত করতে চায়।

ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোঃ মুজাক্কীরুল হুদা তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে এমন একটি ভারসাম্যপূর্ণ পথ যেখানে অর্থনীতি, পরিবেশ ও সমাজ একে অপরের পরিপূরক।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ইনোভেশন’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। ফারাজ ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত এই কেন্দ্রটি কৃষি, অবকাঠামো ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সেমিনারের সমাপ্তি ঘটে অংশগ্রহনকারীদের সঙ্গে আলোচকদের এক প্রানবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে।